বান্দরবান

পার্বত্য এই জেলা পাহাড়-পর্বত-ঝর্ণা-হ্রদ-নদীর অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত। সরকারি দলিলপত্রে বান্দরবান নামে পরিচিত এই জেলাটিকে মারমা ভাষায় বলা হয় রদ ক্যওচি ম্রো। বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলার একটি। এখানেই আছে সরকারিভাবে দেশের সর্বোচ্চ পর্বত হিসেবে স্বীকৃত তাজিংডং বিজয়, পূর্বে সর্বোচ্চ ও বর্তমানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে স্বীকৃত কেওক্রাডং।

শুষ্ক মৌসুমে চান্দের গাড়িতে করে ঘুরে আসতে পারেন তাজিংডং কিংবা কেওক্রাডংয়ের দিকে। না, এই গাড়িতে করে চাঁদে যাওয়া যায় না, তবে অনেক উঁচু পাহাড়ি রাস্তায় উঠে বলে এই নাম। কেওক্রাডংয়ের কাছেই আরেকটি ছোট পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান বগা লেকের।

বগা লেকের গঠন মনে হয় আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের মত। নানা গল্প প্রচলিত এই লেক ঘিরে। কথিত আছে ড্রাগন-দেবতা, বম ভাষায় বগা-কে হত্যা করলে গ্রাম ধ্বংস হয়ে এই পাহাড় চূড়ায় এই হ্রদ সৃষ্টি হয়। আরেকটি গল্পে বলা হয় গ্রামবাসী একটি সুরঙ্গবাসী সাপ ধরে খেয়ে ফেললে নাগরাজের প্রতিশোধে গ্রাম দেবে হ্রদের সৃষ্টি। আজও বম, ম্রো দের অনেকের বিশ্বাস হ্রদের তলদেশে নাগরাজ লেজ নাড়ালে পানি ঘোলাটে হয়ে যায়।

কখনো মেঘ ছোঁয়ার শখ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন নীলগিরি, যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ মিটার উঁচুতে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের মাঝে মেঘের সাথে মিতালি করা যায়। নীলগিরি যাওয়ার পথেই পড়ে শৈল প্রপাত আর চিম্বুক পাহাড়। সদা বহমান স্বচ্ছ শীতল পানির ধারা বয়ে চলে পাহাড়ি ঝর্ণা শৈল প্রপাতে। আর মনোরম প্রকৃতি চিম্বুক পাহাড়কে পরিচিত করেছে 'বাংলার দার্জিলিং' হিসেবে।

আরো ঘুরে আসতে পারেন নীলাচলে, যে পাহাড়ি এলাকা কারো ভাষায় 'স্বর্গভূমি'। নির্মল বাতাসে হৃদয়কে সিক্ত করে নিতে পারেন এখানে। মেঘ সেখানে হাতের কাছেই ভেসে বেড়ায়। প্রসন্ন ভাগ্য হলে মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্যও উপভোগ করা যেতে পারে। সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের দৃশ্য এখানে মনোমুগ্ধকর। তবে সন্ধ্যার পর যারা সেখানকার রিসোর্টে রাত কাটাবেন, শুধু তারাই সেখানে থাকতে পারেন। আরো নীলের ছোঁয়া পেতে শ্রভ্র নীল থেকে ঘুরে আসা যেতে পারে। নীলাচল পাহাড়ের খানিকটা নিচে এর অবস্থান।

রহস্য এবং রোমাঞ্চের প্রতি ভালোবাসা থাকলে আলী সুড়ঙ্গে ঘুরে আসা হতে পারে খুবই আকর্ষণীয়।গহীন অরণ্যে দুই পাহাড়ের মাঝে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই সুড়ঙ্গকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই কালের আবর্তে গড়ে ওঠেছে নানা কল্পকথা। অন্ধকার সুড়ঙ্গে মশাল হাতে হেঁটে চলা আর মাঝে নীরবতা ভেঙে বাঁদুড়ের উড়ে চলা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অবশ্যই।

বান্দরবান জেলার শেষ প্রান্তে ২৫ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত প্রান্তিক লেক। লেককে ঘিরে আছে গাছগাছালি, মাটির মঞ্চ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার এবং লেকের সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য উঁচু গোল ঘর। পিকনিকের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান।

বান্দরবান

Explore the place

শহরের মানচিত্র